পাঁচ বছরে কর্মসৃজন হবে এক কোটি ২৮ লাখ
বিজবার্তা রিপোর্ট :
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

ঢাকা : আগামী পাঁচ বছরে কর্মসৃজন হবে এক কোটি ২৮ লাখ। প্রতিটি উপজেলা থেকে প্রতি বছর এক হাজার যুব বা যুব নারীকে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণার সময় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ আগামী পাঁচ বছরে জিডিপি ১০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে এবং ২০৩০ সালে দেশে মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ৪৭৯ ডলারের বেশি হবে বলে এতে জানানো হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাস করি। আমাদের এবারের অঙ্গীকার, আমরা টেকসই বিনিয়োগ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত করব। এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জনগণ কিছু পায়, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা ও সমৃদ্ধির সব সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাঙ্ক্ষিত ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।
নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী কোনো শক্তি এ সময় ক্ষমতায় থাকলে তা হবে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গ্লানিকর। তাই দেশবাসীর প্রতি আমার আকুল আবেদন, ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করুন। আপনারা নৌকায় ভোট দিন, আমরা আপনাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জন করে দেব, এটা আমাদের জাতির কাছে ওয়াদা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আগামী পাঁচ বছরে ১ কোটি ২৮ লাখ কর্মসৃজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলা থেকে প্রতি বছর এক হাজার যুব বা যুব নারীকে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ ভূখণ্ডে যা কিছু মহৎ অর্জন ও প্রাপ্তি, সবকিছু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে দেশ পরিচালনায় তার দলের সাফল্যের দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমরা আলোর পথে যাত্রা করেছি। একাদশ নির্বাচন সামনে রেখে আমরা আবারো সমৃদ্ধির, অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ স্লোগানসংবলিত নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আমরা আমাদের ইশতেহার এমনভাবে তৈরি করেছি, যাতে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারি। একই সঙ্গে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাগুলোর ধারাবাহিকতা ২০১৮-এর নির্বাচনে ইশতেহারেও সংরক্ষিত রয়েছে।
ঘোষিত ইশতেহারে দেশের প্রতিটি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন এবং জাতীয় পর্যায়ে স্বল্প, মধ্যম ও উচ্চশিক্ষিত তরুণদের তথ্যসংবলিত একটি ইন্টিগ্রেটেড ডাটাবেজ তৈরি করার কথা বলেছে। আরো বলা হয়েছে, তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে বিনা জামানতে ও সহজ শর্তে জনপ্রতি ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হচ্ছে এবং তরুণদের জন্য প্রতি উপজেলায় যুব বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। আর প্রতিটি জেলায় একটি করে যুব স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে।
নারীর ক্ষমতায়নে বাল্যবিবাহ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান মজুরি নিশ্চিত করার ও নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহী করতে আলাদা ব্যাংকিং ও ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে ইশতেহারে। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বর্তমানে ৪ কোটি ৯২ লাখ মানুষ বিভিন্ন আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে আগামী পাঁচ বছরে এ সংখ্যা দ্বিগুণ করে সব ধরনের ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দারিদ্র্যের হার ১২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার, প্রতি পরিবারে অন্তত একজনের নিয়মিত রোজগার নিশ্চিত করার, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প অব্যাহত রাখার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার কথাও রয়েছে।
গ্রামাঞ্চলে আধুনিক সুবিধা সম্প্রসারণে প্রতিটি গ্রামকে শহরে উন্নীত করার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, শহরের সুবিধা গ্রামে পৌঁছে দেব। আগামী পাঁচ বছরে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। পাকা সড়কের মাধ্যমে সব গ্রামকে জেলা-উপজেলা শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। ছেলেমেয়েদের উন্নত পরিবেশে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। সুপেয় পানি ও উন্নত মানের পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। সুস্থ বিনোদন ও খেলাধুলার অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। কর্মসংস্থানের জন্য প্রতি জেলা-উপজেলায় কলকারখানা গড়ে তোলা হবে। ইন্টারনেট সংযুক্তি সর্বত্রে পৌঁছে যাবে।
আরো বলা হয়েছে, একটি আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর, দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত দেশপ্রেমিক গণমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত থাকবে। প্রশাসনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়পরায়ণতা ও জনসেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করা হবে। আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তি চালুর মাধ্যমে দুর্নীতির পরিধি ক্রমান্বয়ে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হবে।
কৃষি উপকরণের ওপর ভর্তুকি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতাসীন দল বলেছে, কৃষি যন্ত্রপাতি সুলভ ও সহজপ্রাপ্য করা হবে। ভ্যালু চেইন গড়ে তোলা হবে। কৃষি গবেষণা বাজেট বাড়ানো হবে। ছোট ও মাঝারি আকারের দুগ্ধ ও পোলট্রি খামার প্রতিষ্ঠা এবং মত্স্য চাষে সহজ শর্তে ঋণ, প্রয়োজনমতো ভর্তুকি, প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও নীতিসহায়তা বৃদ্ধি করা হবে।
বিদ্যুৎ ও জালানি খাত সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতির মধ্যে ২০২০ সালের মধ্যে সবার ঘরে বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা এবং ২০২৩ সালের মধ্যে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পাঁচ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হবে বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
- ‘আমার অনেক সম্পদ আছে, আমি সাতজন জমিদারের নাতি’
- সংস্কার দেখতে ঢাকায় আইএমএফ কর্মকর্তা
- ‘অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ সামাল দেয়া গেছে’
- চাল রপ্তানি বন্ধ করল ভারত
- ‘শ্রীলঙ্কার পরিণতি হবে না’
- কর কাঠামোতে নানা ছাড়
- ‘সুদ ব্যয় সাশ্রয়ে ব্যাংক ঋণ নির্ভর সরকার’
- ‘কপ-২৪’ সম্মেলনে হতাশা
- বাজেট ২০২০-২১ : অর্থের টানাপড়েনেও বড় আকাঙ্খা
- বরাদ্দের শীর্ষ দশে নেই কৃষি ও সামাজিক সুরক্ষা খাত
- জীবন-জীবিকা পুনরুদ্ধারই বড় চ্যালেঞ্জ
- বাজেট দিলেন কে কয়বার-
- সঞ্চয়পত্রের লেনদেন সপ্তাহে দুইদিন
- অর্থের টানাপড়েনেও বড় আকাঙ্খা
- আর্থিক খাতে বড় সংস্কারের প্রতিশ্রুতি