ঋণ ফেরত দিতে পারছে না ৬৩ ভাগ মানুষ
বিজবার্তা রিপোর্ট :
বিজ বার্তা
প্রকাশিত : ১২:৪৮ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২০ শুক্রবার
ঋণ নিয়ে তা ফেরত দেবার হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩ ভাগ। যা করোনার আগে, শতভাগের কাছাকাছি ছিল। একই ভাবে নতুন ঋণ বিতরণ করেছে ২৯ ভাগ। আর ক্ষুদ্রঋণে সঞ্চয় কমার হার ৩৬ ভাগ। সার্বিকভাবে করোনা’র এই সময়ে ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থায় তৈরী হয়েছে বিপর্যয়।
কোভিড পূর্ববর্তী (জানুয়ারি-মার্চ) ও কোভিড চলাকালীন ক্ষুদ্র ও মাঝারি এমএফআইগুলোর আর্থিক অবস্থার উপর অন্তভূক্তিমূলক অর্থায়ন এবং উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান, আইএনএম’র সমীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, আর্থিক সক্ষমতা কমে যাওয়ায় করোনা চলাকালীন এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন ঋণ বিতরণ ২৯ শতাংশ কমেছে। আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় গড় ঋণ বিতরণ কমেছে ২৫ শতাংশ।
আর ঋণ স্থিতি কমেছে ৭ শতাংশ। এসময় তাদের সক্রিয় সদস্যও কমেছে ৪ শতাংশ। ঋণ বিতরণের পাশাপাশি কমেছে সঞ্চয়ের পরিমাণও। নিয়মিত সঞ্চয়ী সদস্যদের সঞ্চয় কমেছে ৩৬ শতাংশ। করোনার আগে ও করোনা চলাকালীন সময় ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় কমেগেছে, ৪২ শতাংশ। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের খরচ বেড়েছে ৮ শতাংশ। ফলে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ে তীব্র অসামঞ্জস্য তৈরি হয়েছে। কোভিড চলাকালীন শতকরা ৯৪ ভাগ এমএফআই প্রতিষ্ঠানের আয় নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে।
গবেষণায় ধরা পড়েছে, গড়ে প্রতি মাসে এনজিও প্রতিষ্ঠানের তারল্য সংকট প্রায় ৯ কোটি টাকা। ঋণ শোধ না হওয়া এবং গ্রাহক সঞ্চয় তুলে নেয়ায় চরম তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে, এনজিওগুলো অনেকাংশে বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় সংকট বাড়ছে।
ক্ষুদ্রঋণের আওতায় রয়েছে দেশের প্রায় তিন কোটি পরিবার। গ্রামীণ অর্থায়নের প্রায় ৭৩ ভাগ যোগান আসে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। বিতরণকৃত ঋণের ৪৪ ভাগ বিনিয়োগ হয় কৃষিতে, আর ক্ষুদ্র উদ্যোগ খাতে বিনিয়োগ হয় ৩১ ভাগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, দেশের ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলো প্রতিবছর জাতীয় বাজেটের ৩৫ থেকে ৩৮ শতাংশ কৃষি ঋণ খাতে এবং দরিদ্র, ভূমিহীন ও প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করে। ইকোনমিস্ট ইন্টিলিজেন্ট এর তথ্য বলছে, দেশের ক্ষুদ্রঋণ খাতে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ১৫ ভাগ। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে দূরে থাকা বড় সংখ্যাক মানুষদের আর্থিক নিশ্চয়তা দিচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ। আড়াই লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এনজিও খাত।
আইএনএম-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরি জানান, ক্ষুদ্রঋণে সম্পৃক্ত অধিকাংশ গ্রাহকের প্রতিদিনের আয় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঋণ শোধ করতে পারছে না। কিস্তি আদায় কমায়, স্বাভাবিকভাবেই কমেছে ঋণ বিতরণও।