ঢাকা, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ || ১০ বৈশাখ ১৪৩১
Biz Barta :: বিজ বার্তা
Place your advertisement here

জৈব সার কেন অপরিহার্য

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৯  


বিজবার্তা রিপোর্ট :


মাটি একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। এ দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা হচ্ছে কৃষি যা এ মৃত্তিকা সম্পদের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু দেশের মৃত্তিকা আজ হুমকির সম্মুখীন। অধিক মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহারই এর প্রধান কারণ। 
মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে মাটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। মাটির অম্লত্ব পরিবর্তিত হয়ে অনুজীবের কার্যাবলী ব্যহত হচ্ছে। এতে মাটির উৎপাদনশীলতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ফসল উৎপাদনের সঙ্গে মাটির উর্বরতা সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। 
মাটিকে তখনই উর্বর বলা হবে যখন তাতে কোন উদ্ভিদের পরিপূর্ণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সব খাদ্য উপাদান সঠিক পরিমাণ বিদ্যমান থাকে। অনুর্বর জমিতে ফসলের ফলন হয় কম এবং উর্বর জমিতে ফলন হয় বেশী। সুতরাং অধিক উৎপাদন পেতে হলে মাটির উর্বরতা শক্তি বজায় রাখতে হবে। জৈব পদার্থ হচ্ছে মাটির প্রাণ। জৈব সার গাছের খাদ্য ভান্ডার হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা দীর্ঘদিন ধরে গাছ ব্যবহার করতে পারে অর্থাৎ উদ্ভিদের অত্যাবশ্যকীয় সকল পুষ্টি উপাদান জৈব পদার্থে বিদ্যমান। 
জৈব পদার্থ মাটিতে ব্যাকটেরিয়া তথা অনুজীবের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং গাছের পুষ্টি উপাদান গ্রহনের উপযুক্ত অবস্থা তৈরী করে অর্থাৎ জৈব পদার্থ পুষ্টি উপাদান গুলোকে মাটিতে সহজলভ্য করে ও সুষম অনুপাতে থাকতে সহায়তা করে। গাছের মুখ্য উপাদান নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সালফার ও ক্যালসিয়াম বেশী পরিমাণে সংযুক্তি করে। তাছাড়া কোন সার প্রয়োগ করলে তার ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়। জৈব সার রাসায়নিক সারের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। 
পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় ফলে সহজেই গাছ মাটি থেকে পুষ্টি উপাদান গ্রহন করতে পারে। বেলে ও দোআঁশ মাটিতে পানি ও সারের অপচয় হ্রাস পায় এবং এটেল মাটি ঝুরঝুরা করে। জৈব সার গাছের বৃদ্ধিকারক হরমোন সরববাহ করে ফলে গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গরম কালে মাটির তাপমাত্রা কমিয়ে এবং শীতকালে গরম রাখতে সাহায্য করে অর্থাৎ মাটির উত্তাপ নিয়ন্ত্রণ করে। মাটির অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব নিয়ন্ত্রণ করে। 
জমিতে গাছের অনুখাদ্য উপাদানের উৎস হিসাবে জৈব সারের ভূমিকা রয়েছে অর্থাৎ মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে গেলে গাছের গৌন পুষ্টি উপাদান সমূহের অভাব দেখা দেয়। মাটির বুনট উন্নত করে ফলে ভূমিক্ষয় বোধ হয়। জমিতে কীট নাশক ঔষধ ও রাসায়নিক সারের দ্বারা কোন বিষক্রিয়া সৃষ্টি হলে জৈব সার ঐ বিষক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে। ইদানিং আমরা রাসায়নিক সারের উপর এতই নির্ভশীল হয়ে পড়েছি যে জৈব সারের কথা কেউ কেউ ভুলেই গেছি।
দেশের প্রেক্ষাপটে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং অল্প জমিতে বেশী ফলন পেতে হলে মাটির স্বাস্থ্য ভাল রাখতে হবে। মাটি তার উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফেললে খাদ্য উৎপাদনে ভাটা পড়বে এবং ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠির সাথে তাল মিলিয়ে বর্ধিত খাদ্য উৎপাদনে দারুন সংকট দেখা দিবে। আর মাটির স্বাস্থ্য ভাল রাখার পূর্বশর্তই হলো জমিতে জৈব পদার্থ ব্যবহার করা। 
বিভিন্ন্ জৈব সার যেমন গোবর, খামারজাত সার, কম্পোস্ট, বসতবাড়ীর আশেপাশে পঁচা আর্বজনা সার, খৈল, সবুজ সার, ছাই, খড়-নাড়া, কচুরীপানা, পচা পাতা ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারি। দেশে গরু ছাগলের স্বল্পতা হেতু গ্রীন মানুউরিং এর মাধ্যমে জমিতে জৈব সার যোগ করতে হবে। অর্থাৎ গ্রীন মানুউরিং হলো জৈব পদার্থ সংযুক্ত করার একটি উত্তম পন্থা।
 


Place your advertisement here
Place your advertisement here
Place your advertisement here
Place your advertisement here